অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লাকেম্বার লাইব্রেরি হলে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফএম তাওহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং প্রকৌশলী মশিউর রহমান মুন্না, শফিউল আলম শফিক ও আবিদা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি নির্বাচন-পরবর্তী বাংলাদেশ গড়ার কাজে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
আমীর খসরু বলেন, “আগামী দিনে নির্বাচন যাতে সঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে হয়, সেটিই মুখ্য বিষয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ও এমপিদের সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন হবে। আপনাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গঠিত বিএনপির আদর্শে আপনারা বিশ্বাসী। আপনারা বিদেশে কষ্ট করে দলের কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন, আন্দোলন-সংগ্রামে অবদান রেখেছেন। তা অব্যাহত রাখতে হবে।” তিনি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বিএনপির নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং বিগত আন্দোলনে তাদের অবদানের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুল হক। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একটি চক্র বাংলাদেশে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এর দাঁতভাঙা জবাব দিতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।” তিনি জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাধাদানকারীদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। এছাড়া, তিনি সুখবর দেন যে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা এবার নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, যদিও প্রক্রিয়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে এখন সরাসরি অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে, এবং এই প্রক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়া বিএনপির অবদান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির কোশাধ্যক্ষ মনজুরুল হক আলমগীর। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সেলিম লকিয়ত। অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফএম তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “তারেক রহমান শহীদ জিয়াউর রহমানের মতোই আদর্শবান কাণ্ডারি হবেন। জিয়ার আদর্শের প্রতিচ্ছবি আমরা তারেক রহমানের মধ্যে দেখি। তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেতৃত্বে বাবার মতোই অবদান রাখবেন।” তিনি জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশপ্রেমের প্রশংসা করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার জিয়াকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। বিএনপি ৪৭ বছরের ত্যাগ, সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মাধ্যমে এই জায়গায় পৌঁছেছে।”
স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ অমি ফেরদৌস বিএনপির সংগ্রাম ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যাতে ৪০ জন শিশু অংশ নেয়। জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) অস্ট্রেলিয়া শাখার নব-অনুমোদিত কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম শিবলি ও সদস্য সচিব বাদশা বুলবুলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এছাড়া, বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক নামিদ ফারহানের তত্ত্বাবধানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম ও শাহ আলম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন শহীন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সবুজ, যুবদলের জাহাঙ্গীর আলম ও ফারুক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মশিউর রহমান তুহিন, জাহিদুর রহমান, খাজা দাউদ হোসেন, আশওয়াদুল হক বাবু, ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম, রেজনুর রহমান রুপন, মোস্তাফিজুর রহমান লাবু, জুম্মন হোসেন, মোকসেদ আলম দীপু, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ শাহেদ, হান্নান রানা, মফিজুল ইসলাম সাগর, আব্দুল আলীম, খাদিজা জামান রুপম, হাসনা হেনা, আজিজুন নাহার মালা, মুরাদ হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ওয়ারিস মাহমুদ, আহসান হাবিব, আবু বকর সিদ্দিক, শাহীনূর রহমান, আবুল হোসেন, হারুনর রশিদ, মোহাম্মদ নূরুর হক, ফখরুল হক মুন্না, মোবারক হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও আসলাম খান প্রমুখ।